যেসব কারণে আপনার রোজা ভঙ্গ হতে পারে
রোজা: রোজা কী? রোজা ভঙ্গের কারণ ও করণীয় ,রোজার শর্ত, প্রকারভেদ, বিধিনিষেধ, উদ্দেশ্য ও উপকারিতা
‘রোজা’ একটি ফারসি শব্দ যার আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘সাউম’ বা ‘সাওম’, এর অর্থ হলো সংযম। রোজা পালন বা সিয়াম হলো ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি। সুবহে সাদিক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা।
রোজা ইসলামের মূল ভিত্তির একটি
এখানে রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই আর্টিকেলটি একটি স্বতন্ত্র আর্টিকেলটি নয়. ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে সাজানো। আমাদের সংকলন দল দাবি করে না যে রোজা প্রসঙ্গে লেখা এই লেখাটি শতভাগ সঠিক। কোনো তথ্যগত ভুল ত্রুটি থাকলে দয়া করে আমাদের জানান।
রোজা কী?
‘রোজা’ একটি ফারসি শব্দ যার আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘সাউম’ বা ‘সাওম’, এর অর্থ হলো সংযম। রোজা পালন বা সিয়াম হলো ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি। সুবহে সাদিক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা। ইসলামি বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমযান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ, যার অর্থ অবশ্য পালনীয়।
রোজা রাখার শর্ত
রোজার কিছু মৌলিক আচার আছে। যা ফরজ বলে চিহ্নিত। সুস্থ-সবল প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। কিন্তু শারীরিক অসমর্থতার কারণে সে এ দায়িত্ব থেকে আপাতভাবে মুক্তি পেতে পারে। এর প্রতিবিধানে রয়েছে কাজা ও কাফফারার বিধান। নিচে রোজার ফরজ ও শর্তগুলো দেওয়া হলো—
রোজার ৩ টি ফরজ হলো—
- নিয়ত করা
- সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকা
- যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকা।
রোজা রাখার ৪ টি মৌলিক শর্ত—
- মুসলিম হওয়া
- বালেগ হওয়া
- অক্ষম না হওয়া
- ঋতুস্রাব থেকে বিরত থাকা নারী।
রোজার প্রকারভেদ
রোজা পাঁচ প্রকার, যথা—
- ফরজ রোজা
- ওয়াজিব রোজা
- সুন্নত রোজা
- নফল রোজা
- মোস্তাহাব দোজা

ফরজ রোজা
ফরজ রোজা চার প্রকার—
- রমজান মাসের রোজা।
- কোন কারণ বশত রমজানের রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে তার কাযা আদায়ে রোজা।
- শরীয়তে স্বীকৃত কারণ ব্যতীত রমজানের রোজা ছেড়ে দিলে কাফ্ফারা হিসেবে ৬০টি রোজা রাখা।
- রোজার মান্নত করলে তা আদায় করা।
ওয়াজিব রোজা
নফল রোজা রেখে ভঙ্গ করলে পরবর্তীতে তা আদায় করা ওয়াজিব।
সুন্নত রোজা
মহরম মাসের নয় এবং দশ তারিখে রোজা রাখা হলো সুন্নত রোজা।
মোস্তাহাব রোজা
প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪, এবং ১৫ তারিখে, প্রতি সাপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারে, কোন কোন ইমামের মতে শাওয়াল মাসে পৃথক পৃথক প্রতি সপ্তাহে দুটো করে ছয়টি রোজা রাখা মোস্তাহাব। তবে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে এক সাথে হোক কিংবা পৃথক পৃথক হোক শাওয়ালের ছয়টি রোজা মুস্তাহাব।
নফল রোজা
মোস্তাহাব আর নফল খুব কাছাকাছির ইবাদত। সহজ অর্থে নফল হলো যা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত নয় এমন ইবাদত পূণ্যের নিয়তে করা। রোজার ক্ষেত্রেও তাই।
রোজায় বিধিনিষেধ
ভাষাতাত্ত্বিকভাবে, আরবি ভাষায় উপবাস শব্দের অর্থ যে কোনো সময় কোনও কর্ম বা বক্তব্য থেকে নিঃশর্ত ‘সংযম’ (ইমসাক)। পবিত্র আইন অনুযায়ী, রোজা রাখা একটি বিধান যা বুঝায়:
- দেহগহ্বরের মধ্যে কোনো কিছু প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা;
- যৌন ক্রিয়াকলাপে জড়ানো থেকে বিরত থাকা;
- পরনিন্দার মতো অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা;
- সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা ;
- উপবাস বা রোজার নিয়তের সহিত থাকা;
- উপবাসের জন্য অনুমোদিত ব্যক্তিদের নৈকট্য থেকে বিরত থাকা।
দেহের গহ্বরে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকুন’ মানে দেহের গহ্বরে খাদ্য, পানীয় বা ওষুধ প্রবেশ করা, তা শরীরের গহ্বরে প্রবেশ করবে কি না তা নির্বিশেষে, এটি যে কোনও সাধারণ বস্তুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এগুলোর যে কোনো একটির শরীরের গহ্বরে প্রবেশ করার অর্থ হলো তা গলা, অন্ত্র, পাকস্থলী বা নাকের গহ্বর দিয়ে মস্তিষ্ক, গোপনাঙ্গ বা কাঁটাযুক্ত ঘা ইত্যাদিতে প্রবেশ হওয়াকে বুঝায়।
এটি ইচ্ছাকৃত বা দুর্ঘটনাজনিত হোক না কেন, ব্যতিক্রম হল ভুলভাবে খাওয়া বা যৌন কার্যকলাপে জড়িত। ‘যৌন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা’ এর মধ্যে সরাসরি মিলন এবং লিঙ্গ থেকে বীর্যপাতও অন্তর্ভুক্ত। ”সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার” অর্থ হল আক্ষরিক অর্থে ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত রোজা রাখা। ‘রোজার নিয়ত’ মানে একজন ব্যক্তির রোজা রাখার নিয়ত বা সংকল্প, সে আসলে ইবাদতের উদ্দেশ্যে রোজা রাখছে কিনা। উদাহরণ স্বরূপ, যদি কেউ রোযার নিয়ত ব্যতীত মদ্যপান থেকে বিরত থাকে বা যৌনকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে সে রোযা পূর্ণ হবে না এবং গণনাও হবে না। ‘রোযার অনুমতিপ্রাপ্তদের সান্নিধ্য থেকে বিরত থাকার’ অর্থ হল একজন ব্যক্তিকে এমন পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকতে হবে যা তার রোজাকে হালকা করে। যেমন: ঋতুস্রাব বা যোনিপথে রক্তপাত (প্রসবোত্তর রক্তপাত) ইত্যাদি। স্ত্রী বা অন্য কারো সাথে যৌন মিলন ছাড়াও রোজা অবস্থায় হস্তমৈথুন করাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এমনটি করলে রোজা ভঙ্গ হবে এবং যে ব্যক্তি এটি করেছে তাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে তাওবা করতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে এই রোজাটি পূরণ করতে হবে।
রোজা ভঙ্গের কারণ
- ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
- স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে ।
- কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
- ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
- সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
- পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
- দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
- ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
- মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে ।
- রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
- নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
- জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে ।
- ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ঔষধ পৌছালে।
- কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
- মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
যেসব কারণে রোজা না রাখলে ক্ষতি নেই তবে কাযা আদায় করতে হবে
- কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।
- গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযা করে দিতে হবে।
- যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে।
- শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।
- কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাযা করতে হবে।
- কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা
- ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাযা করতে হবে।
- হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।
রোজা ভঙ্গ হলে করনীয়
বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট। কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে।
একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
যদি কারও জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয় তবে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খাওয়াতে হবে। কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দুই বেলা করে পেটভরে খাওয়াতে হবে।
গোলাম বা দাসী আজাদ করে দিতে হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে রোজা ভঙ্গ করা যাবে?
যে সব কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে কিন্তু পরে কাজা করতে হয় তা এখানে উল্লেখ করা হলো—
- মুসাফির অবস্থায়
- রোগ-ব্যাধি বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে
- মাতৃগর্ভে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে
- এমন ক্ষুধা বা তৃষ্ণা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে
- শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে
- কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে।
- মহিলাদের মাসিক হায়েজ-নেফাসকালীন রোজা ভঙ্গ করা যায়
রোজা ভঙ্গের যেসব কারণে শুধু কাজা আদায় করতে হয়
- স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে যদি বীর্যপাত হয়
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে
- পাথরের কণা, লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেললে
- ডুশ গ্রহণ করলে
- বিন্দু পরিমাণ কোন খাবার খেলে তবে অনিচ্ছাকৃত ভাবে বা মনের ভুলে খেলেও রোজা ভাংবে না তবে মনে আসা মাত্রই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে
- নাকে বা কানে ওষুধ দিলে (যদি তা পেটে পৌঁছে)
- মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পেঁৗছে
- যোনিপথ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে সহবাস করার ফলে বীর্য নির্গত হলে
- স্ত্রী লোকের যোনিপথে ওষুধ দিলে
রোজা মাকরুহ হওয়ার ১৬ কারণ
রোজা একটি ফরজ ইবাদত। এই রোজা পালনের কিছু বিধি-বিধান রয়েছে। সেগুলো মেনে অত্যন্ত পবিত্রতার সাথে রোজা পালন করতে বলা হয়েছে ইসলাম ধর্মে। ছোটখাটো কিছু ভুল থেকে শুরু করে বড় বড় কিছু কাজে রোজা মাকরুহ হয়ে যেতে পারে। এর পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে।
রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ
রোজা যে সকল কারণে মাকরুহ হতে পারে তা এখানে উল্লেখ করা হলো—
- সারাদিন রোজা সঠিকভাবে করার পরেও সন্ধ্যায় ইফতারির সময় আপনি যদি এমন কোনও খাবার গ্রহণ করেন যেটি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম, তাহলে আপনার রোজাটি মাকরুহ হবে।
- কোনও কিছু স্রেফ মুখে পুরে রাখলেন, খেলেন না তাতেও রোজা মাকরুহ হবে।
- গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়ায় রোজা মাকরুহ হয়। আর এসব করার সময় পেটে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
- মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে।
- রমজানের সারাটি দিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও বিষয়ে অস্থির হয়ে উঠলে কিংবা কাতরতা দেখালে রোজা মাকরুহ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে কোনও কোনও ব্যাখ্যা।
- পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিস্কার করলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়।
- মুখে গুল ব্যবহার মাকরুহ এবং থুথুর সঙ্গে গুল গলার ভেতর চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- রোজা রেখে কারো গিবত করলে বা পরনিন্দা করলে রোজা মাকরুহ হয়।
- মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। রোজা রেখে এ কাজটি করলে তা মাকরুহ হবে।
- রোজা রেখে ঝগড়া-বিবাদ করলে রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও কারণ ছাড়াই কিছু চিবুতে থাকলে রোজা মাকরুহ হবে।
- যৌন উদ্দিপক কিছু দেখা বা শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতেও রোজা মাকরুহ হয়
- নাচ, গান, সিনেমা দেখা ও তাতে মজে থাকলে রোজা মাকরুহ হয়।
- রান্নার সময় রোজাদার কোনও কিছুর স্বাদ নিলে, লবন চেখে দেখলে, ঝাল পরীক্ষা করলে মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনে সেটা যদি করতেই
রোজার উদ্দেশ্য কী?
রোজা রাখার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং নিজেদের কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরহেজগারি বা তাকওয়া বৃদ্ধি করা।
কুরআনে বলা হয়েছে,
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো”। — সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩
আরও বলা হয়েছে,
“রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।” — সূরা বাকারা: ১৮৫
‘তাকওয়া’ শব্দটির মূল অর্থ ‘রক্ষা করা।’ এর অনুবাদ করা হয়েছে নানাভাবে। যেমন পরহেজগারি, আল্লাহর ভয়, দ্বীনদারি, সৎ কর্মশীলতা, সতর্কতা প্রভৃতি। রোজা ঢালের মতো কাজ করে, যা গোনাহের হাত থেকে বাঁচায়।
রোজার উপকারিতা
রমজানের একটি বিশেষ ফজিলত বা মাহাত্ম্য হচ্ছে,এই পবিত্র রমজান মাসে আল কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। রমজান মাসের রোজা মানুষকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেয়,মানুষের কুপ্রবৃত্তি ধুয়ে মুছে দেয় এবং আত্মাকে দহন করে ঈমানের শাখা প্রশাখা সঞ্জিবীত করে। সর্বোপরি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। এই মর্মে মহানবী ইরশাদ করেছেন,
“রোজাদারের জন্য দুটি খুশি। একটি হলো তার ইফতারের সময়, আর অপরটি হলো আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।” — (বুখারী ও মুসলিম)
https://www.bishleshon.com/5873/ ইনফো বিডি, উইকিপিডিয়া,